লক্ষ্মীপুর:প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জেলে নিবন্ধনের নামে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।৭ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান চলছে, তাই নদীপাড়ে জেলেরা অবসর সময় কাটাচ্ছেন। চর কালকিনি ইউনিয়নের নাসিরগঞ্জ বাজার মাছ ঘাটে আট-দশজন জেলের সাথে কথা হয়,তারা সবাই জানান, তাদের কারোরই জেলে কার্ড নেই, জেলে কার্ড না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তারা সবাই জানান, জেলে নিবন্ধন করতে টাকা লাগে টাকা ছাড়া জেলে নিবন্ধন হয়না।তাদের মধ্যে থেকে সাদ্দাম হোসেন নামে এক জেলে জানান, তার বয়স ১৮ বছর তিনি ছোটবেলা থেকেই দেখেন তার বাবা জেলে কিন্তু তার বাবার জেলে কার্ড নেই,জেলে কার্ড করতে টাকা চাওয়া তিনি রাগে ক্ষোভে আর জেলে কার্ড করান নি। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল কুদ্দুস কিছু জনপ্রতিনিধি ও তার পছন্দ কিছু লোকের মাধ্যমে জেলে নিবন্ধন এর জন্য জনপ্রতি ১ হাজার থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত নিচ্ছে,আবার ইচ্ছামত অনেক জেলের কার্ড আটকে দেন।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মৎস্যজীবী নেতা জানান,মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল কুদ্দুসের বিশ্বস্ত সহযোগীদের মধ্যে কালকিনি ৭নং নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল মজিদ,কালকিনি ৬নং নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যের ভাই কাদের মুন্সি,কালকিনি ৫নং ওয়ার্ডের মান্নান মাষ্টার,চর লরেঞ্জের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল খালেক।
উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের নামও রয়েছে। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য আব্দুল মজিদ জানান, মৎস্য কর্মকর্তা তাকে জেলে নিবন্ধনের জন্য ৬৫ টি ফরম দিয়েছেন,তারপরও তার ৭ জন জেলে বাদ পড়ায়, অতিরিক্ত আরো সাতটি ফরম ১হাজার ৫শত টাকা দিতে হয়েছে তাকে। কালকিনির ৮ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোঃ মাকছুদ,জানান জেলে নিবন্ধনের জন্য কাদের মুন্সি তার কাছ থেকে ২হাজার টাকা নিয়েছে। চর লরেন্স ইউনিয়নের এক নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোঃ আবুল কাশেম জানান, মৎস্য কর্মকর্তা তার জেলে কার্ড টি আটকে রাখেন।পাঠারির হাট ইউনিয়নের আরেক বাসিন্দা মোসলেহ উদ্দিন মাঝি জানান,তিনি এক বছর জেলেদের সকল সহায়তা পেলেও এক বছর পর মৎস্য কর্মকর্তা তার জেলে কার্ড আটকে দেন।কালকিনি ইউনিয়নের বাসিন্দা মান্নান মাষ্টার জানান, জেলে সমিতির নেতাদের মাধ্যমে জেলে নিবন্ধন করছে উপজেলা মৎস্য অফিস, টাকা নেওয়ার বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুল কুদ্দুস জানান, তিনি এই অনিয়মের সাথে জড়িত নন, যাচাই বাচাইয়ের জন্য চেয়ারম্যানরা জেলে কার্ড আটকে রাখেন।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুজ্জামান জানান, জেলে নিবন্ধনের নামে টাকা নেওয়ার বিষয়ে কোনো অভিযোগ তিনি শুনেন নি, খোঁজখবর নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।
Leave a Reply